Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিশু সুরক্ষা প্রকল্প (সিএসপিবি)


সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সুরক্ষার লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে দুইটি পৃথক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর একটি হচ্ছে, চাইল্ড সেনসিটিভ সোস্যাল প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ (সিএসপিবি) প্রকল্প


সিএসপিবি প্রকল্পের প্রেক্ষাপট:

সামাজিক সুবিধাবঞ্চিত শিশু, বিশেষ করে পথ শিশুদের সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাস হতে UNDP’র অর্থায়নে Appropriate Resources for Improving Street Children’s Environment (ARISE) প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়ে মার্চ ২০০৭ সালে সমাপ্ত হয়েছে। পরবর্তীতে UNICEF বাংলাদেশের অর্থায়নে Protection of Children at Risk (PCAR) প্রকল্প , ১ এপ্রিল ২০০৭ হতে শুরু হয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে সমাপ্ত হয়। এরপর সিএসপিবি প্রকল্প, ফেইজ- ১, ১লা জানুয়ারি ২০১২ হতে শুরু হয়ে ৩০ জুন ২০১৭ তারিখে সমাপ্ত হয়। সিএসপিবি প্রকল্প, ফেইজ ২, ১ জুলাই ২০১৭ হতে শুরু হয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত চলমান থাকে এবং পরবর্তীতে প্রকল্পের শিশুবান্ধব জরুরী কার্যক্রম অনুমোদিত বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমান চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের সংশোধিত TAPP’র মেয়াদকাল ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত প্রস্তাব করে মন্ত্রণালয়ে সদয় অনুমোদনের জন্য পেশ করা হয়েছে।



লক্ষ্য উদ্দেশ্য

আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে শিশু আইন ২০১৩ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিশুদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন ও অবহেলা হ্রাসের মাধ্যমে ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং উহা প্রতিকারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। এ লক্ষ্যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের United Nations Development Assistance Framework (UNDAF) ভূক্ত ২৬ জেলার ৫২টি উপজেলা এবং ১১ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।


সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য

আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে UNDAF ভূক্ত জেলার ১ মিলিয়ন শিশু ও কমিউনিটির লোকজনের জন্য শিশুবান্ধব সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের উন্নয়ন ও ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হবে ।

 

প্রকল্প এলাকা

United Nations Development Assistance Framework (UNDAF) চিহ্নিত ২০টি জেলা। জামালপুর, নেত্রকোনা, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজার, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, সিরাজগঞ্জ, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা জেলা। এছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগীয় শহরে পথশিশুদের অধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের নিমিত্ত প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

ভোলা জেলার চরফ্যাশন, লালমোহন ও মনপুরা উপজেলায় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।


কার্যক্রম:

বিভিন্ন শিখন ও প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে সমাজকর্মী, প্রবেশন অফিসার, শিশুকল্যাণ বোর্ডের সদস্য ও অন্যান্য সমাজসেবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ;

চাইল্ড হেল্পলাইন 1098 শক্তিশালী ও আধুনিকীকরণ;

কেস ম্যানেজমেন্ট এর মাধ্যমে শিশুর ঝুঁকি নিরূপণ ও সমাজভিত্তিক শিশু সুরক্ষা কাঠামো প্রস্তুত;

শর্তসাপেক্ষে শিশু সুরক্ষা ভাতা প্রদান (বাল্য বিবাহ রোধ, ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম নিরসন, বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে পড়া রোধ );

উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিশু সরক্ষা সমাজকর্মী নিশ্চিতকরণ;

প্রতিবন্ধী শিশুবান্ধব সেবার ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ;

প্রতিবন্ধী শিশুবান্ধব সেবা প্রদানের জন্য সৃষ্টিশীল মডেল প্রকল্প গ্রহণ;

শিশুদের সেবা ও যত্ন বৃদ্ধিকল্পে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন;

এতিম ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের যত্নের জন্য পরিবার এবং সমাজভিত্তিক বিকল্প পরিচর্যা পদ্ধতি অবলম্বন;

শিশু অধিকার এবং শিশু সরক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন কোর্স, প্রশিক্ষণ ও একাডেমিক ডিগ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাধ্যমে প্রবর্তন;

সমাজকর্ম ও শিশু সুরক্ষার উপর মৌলিক সমাজসেবা প্রশিক্ষণ ও পেশাগত সমাজসেবা প্রশিক্ষণ প্রদান;

সমাজকর্ম বাস্তবায়নের নিমিত্ত কার্যসম্পাদন পরবতী Frame work তৈরিকরণ;

শিশু আইন ২০১৩ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সমাজসেবা অধিদফতরের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শিশু সুরক্ষা জনবল বৃদ্ধিকরণ;

শিশু বান্ধব বিচার ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণ;

শিশু সেবা হাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষা, মনোসামাজিক কাউন্সিলিং, বিনোদন প্রদান এর ব্যবস্থাগ্রহণ;

শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এর নিমিত্ত সমাজভিত্তিক শিশুসুরক্ষা কাঠামো শক্তিশালীকরণ ও চাইল্ড হেল্পলাইন 1098 অধিকতর কার্যকর করণ;

শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী শিশুকল্যাণ বোর্ডের কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ;

শিশু সুরক্ষামূলক আইন-কানুন, বিধি-বিধান ও নীতি গ্রহণে এ্যাডভোকেসি প্রদান;


শর্তযুক্ত অর্থসহায়তা কার্যক্রম

সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ এবং রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং চা-বাগানের মাতৃ-পিতৃহীন ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুসহ ২৪ এপ্রিল ২০১৩ সাভার ট্রাজেডির ‘রানা প্লাজা’ ভবন ধ্বসে বিশেষ করে প্রকল্প এলাকার নিহত পরিবারের ১৩৩ জন শিশুসহ মোট ৪,২৭৫ জন শিশুকে ‘শর্তযুক্ত অর্থসহায়তা’ প্রদান করা হয়েছে। শর্তযুক্ত অর্থসহায়তা কার্যক্রমের মূল শর্তসমূহ হচ্ছে, বিদ্যালয়ে শিশুর নিয়মিত উপস্থিতি, বাল্যবিবাহ থেকে সুরক্ষা এবং শিশুশ্রম থেকে সুরক্ষা প্রদান। নির্বাচিত শিশুকে মাসিক ২,০০০ টাকা করে ১৮ মাসের মোট ৩৬,০০০ টাকা ১২,০০০ টাকার তিনটি কিস্তিতে প্রদান করা হয়।


 চাইল্ড হেল্পলাইন-১০৯৮ এর প্রেক্ষাপট:

শিশুআইন ২০১৩ অনুসারে শিশু অধিকার ও শিশুর সামাজিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইউনিসেফ এর আর্থিক ও কারিগরী সহায়তায় দেশব্যাপী চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ এর কার্যক্রম গত ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে। সমাজসেবা অধিদফতরের ৮ম তলায় চাইল্ড হেল্পলাইন এর কেন্দ্রীয় কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটিরদিন সহ ২৪ ঘণ্টা কল সেন্টার এর কার্যক্রম চালু থাকে।


গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৭ অক্টোবর ২০১৬ খ্রি. চাইল্ড হেল্পলাইন-১০৯৮ এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।


Transformation of Institutional Care:

প্রকল্পের অধীন নিম্নোক্ত নয়টি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে


বিভাগ

প্রতিষ্ঠানের নাম

ঢাকা

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (বালক), টঙ্গী, গাজীপুর

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (বালিকা), কোনাবাড়ি, গাজীপুর

শেখ রাসের দুঃস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্র, টুঙ্গীপাড়া, গোপালগঞ্জ

চট্টগ্রাম

সেফ হোম, সিলেট

সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা), কক্সবাজার

সিলেট

সেফ হোম, সিলেট

বরিশাল

সেফ হোম, বরিশাল

সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা), ভোলা

খুলনা

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (বালক), পুলেরহাট, যশোর


শিশুবান্ধব পরিস্থিতির উন্নয়ন, কেস ব্যবস্থাপনার আলোকে সেবাদান, বিদ্যামন সেবার মান উন্নয়ন ও শিশুদের পারিবারিক কিংবা সামাজিক পুনঃএকীকরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের আওতায় নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানে বিনোদন উপকরণ, সেবাদানকারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, শিশুদের জীবন দক্ষতা উন্নয়ন, কেস ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সংষ্কারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।


Case Management Database

বিদ্যমান শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম পরিবীক্ষণের লক্ষ্যে কেস ম্যানেজমেন্ট ডাটাবেজ তৈরিতে সমাজসেবা অধিদফতরকে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে। ইতোমধ্যে ভোলা ও কক্সবাজার সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা), যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, সিলেট, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম মহিলা ও শিশু-কিশোরী হেফাজতীদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র এবং সহযোগী সংস্থা অপরাজেয় বাংলাদেশ-এর ঢাকাস্থ একটি ড্রপ-ইন সেন্টারে কেস ম্যানেজমেন্ট ডাটাবেজ-এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।


চাইল্ড প্রটেকশন নেটওয়ার্ক

শিশুসংবেদনশীল সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে UNDAF চিহ্নিত ২০টি জেলা এবং নির্বাচিত উপজেলাসমূহে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ‘চাইল্ড প্রটেকশন নেটওয়ার্ক’ কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিশু আইন ২০১৩ অনুমোদিত হওয়ায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ‘শিশু কল্যাণ বোর্ড’-এর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রকল্পের অধীন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।


প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি

শিশুবিষয়ক কাজে সমাজকর্মীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিএসপিবি প্রকল্প ইত্যেমধ্যে সমাপ্ত পিকার প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১,৯৫৮ জন সমাজকর্মীকে দুই সপ্তাহের মৌলিক সমাজসেবা (BSST) এবং চার সপ্তাহের পেশাগত সমাজসেবা (PSST) প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২৫৪ জন সেবাদানকারীকে ‘শিশু উন্নয়ন’, ৪৪৭ জন কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন সমাজকর্মীকে ‘শর্তযুক্ত অর্থসহায়তা কার্যক্রম ও কেস ব্যবস্থাপনা’, ১৮ জন কর্মকর্তা ও সমাজকর্মীকে অনলাইন কেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে শিশু কল্যাণ বোর্ড গঠন করা হয়েছে যাতে অসহায়, অবহেলিত, দু:স্থ ও নিপীড়িনের স্বীকার শিশুদের আইনী সেবা, আর্থিক সহায়তা, শিক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা যায়। জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে শিশু কল্যাণ বোর্ডের একাধিক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সিএসপিবি প্রকল্প হতে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।


সেবা প্রাপ্তির স্থানঃ 

# উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়, লালমোহন/ চরফ্যাশন/ মনপুরা, ভোলা

# উপ-তত্ত্বাবধায়ক, সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা), চরনোয়াবাদ, ভোলা